ষষ্ঠ অংশ
“জাত-বজ্জাত”
“…it is not usual, I say, for such privileged and wealthy beings to waste their time in speculations on the state of society, in philosophical reveries, intended at best to console those whom fate has disinherited from the goods of this world.”
কালচারাল ক্লাসিজমের কথা বলব বলছিলাম।
এই যে এখন দেশে সবকিছুতে হিন্দুকরণ আর হিন্দীকরণের চল হয়েছে, হিন্দী বলয়ের চালচলন, রীতিনীতি, খাওয়াদাওয়া পোশাকআষাক ভাষাভাষী সবকিছু আমরা আস্তে আস্তে নিজের বলে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি, এর কারণ কী? সবচেয়ে বড় কারণটা কিন্তু রাজনৈতিক। দেশের ভাষা আসলে রাজধানীর ভাষা। শুধু ভারত বলে নয়, সবজায়গাতেই তাই, সব যুগেই। নেপোলিয়নও সম্রাট হয়ে ফ্রান্সে একই নিয়ম করেছিলেন, চীনের সম্রাটও দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সারা সাম্রাজ্য জুড়ে একই আইন চালু করেছিলেন। ব্যাপারটা চিরকালই এফিশিয়েন্সি আর ইকনমির প্রশ্ন। জাতিগত দোষ নয়, এটা আমাদের প্রজাতিগত বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতি সবসময় চায় বৈচিত্র বাড়াতে; মানুষ সবসময় চায় বৈচিত্র কমাতে।
বাঙালীরা হিন্দী আগ্রাসনের কথা ভেবে রাগ করে, কিন্তু বাংলার ভেতরেই যে একই আগ্রাসনের ডোমেস্টিক ভার্শন রয়েছে, সেটা কেউ বলে না।
কলকাতার বাঙালীয়ানা বরাবরই বাদবাকি বাংলার বাঙালীয়ানাকে মার্জিনালাইজ করে রাখতে চেয়েছে। সেটা অ্যাকাডেমিক পরিসরে রাঢ়ী বাংলাকে স্ট্যান্ডার্ড বাংলা হিসেবে মান্যতা দেওয়াই হোক, আর বোকাটে বাংলা সিরিয়ালে যেকোনো আঞ্চলিক উচ্চারণের অদ্ভুত বিশ্রী উপস্থাপনাই হোক।
এইসব থিওরি যদিও স্কুলে থাকতে জানতাম না। কিন্তু এই মেকানিক্সগুলো আমাদের মধ্যেও পুরোমাত্রায় ছিল।
আমাদের স্কুল যেহেতু আবাসিক ছিল, তাই গার্জেনরা কবে দেখা করতে আসতে পারবে সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট নিয়ম ছিল। প্রতি রবিবার গার্জেনরা এসে তাদের ছেলেদের সঙ্গে দেখা করতে পারত। বিদ্যাপীঠে বিশাল বড় বড় মাঠ ছিল, রাস্তা ছিল, গাছ ছিল আর গাছের ছায়া ছিল, – গার্জেনরা নিজেদের মতো স্পট খুঁজে নিয়ে চাটাই পেতে বসে বাচ্চাদের ওপর স্টক, দরকারি জিনিস, বাড়ি থেকে আনা লুচিমাংস, গল্পের বই – ইত্যাদি স্নেহদ্রব্য বর্ষণ করত। এই যে গার্জেনরা দূরদূরান্তের বিভিন্ন শহর থেকে ট্রেন ধরে দল বেঁধে আসত, এর ফলে আমাদের মধ্যে এক একটা শহরকেন্দ্রিক গ্রুপ তৈরী হত। আমি যেমন ছিলাম শিলিগুড়ির ছেলে, আমার বাবা যখন আমাকে ছুটির পর স্কুলে দিতে আসত, তখন সঙ্গে সমবয়সী-সিনিয়র-জুনিয়র মিলে আরো চার-পাঁচজন শিলিগুড়ির ছেলে এবং তাদের বাবা-মা, একই ট্রেনে করে পুরুলিয়া আসত। অনেকসময়েই এই গ্রুপের লোকেরা নিজেদের টিকিটও কাটত একই সাথে, এবং পুরুলিয়া এসে এক-দেড়দিনের জন্য সবাই উঠত একই হোটেলে। আমাদের শিলিগুড়ি গ্রুপটার যেমন মোটামুটি বাঁধা হোটেল ছিল পুরুলিয়া টাউনে মোহন সুইটসের সামনে হোটেল মীনাক্ষী।
এই শহরকেন্দ্রিক দলগুলোর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই একটা বড় দল ছিল কলকাতা গ্রুপ। একদম ছোট বয়সে জিনিসটা মোটের ওপর বিনাঈন থাকলেও, এইট-নাইনে উঠে এর একটা অন্যরকম চরিত্র তৈরী হতে শুরু করল।
যারা কলকাতার ছেলে ছিল, কী করে যেন অলক্ষ্যে তাদের মধ্যে একটা সহজ সুপিরিয়রিটি গজিয়ে উঠছিল। তাদের শহুরে হাবভাব, তাদের বাবুয়ানি, আধুনিকতম ফ্যাশান সম্পর্কে তাদের দুরস্তপনা, এবং তাদের উন্নত রুচি। এই বোধগুলো অবশ্যই সব কলকাতাওয়ালাদের মধ্যে সমানভাবে ছিল না, কেউ কেউ এমনও ছিল যারা এসব দেখানেপনার ধার ধারত না, – কিন্তু সেগুলো ব্যতিক্রম। আমরা ক্লাস এইট থেকেই দেখেছিলাম, কারো বাবার চাকরি ট্রান্সফার হয়ে কলকাতায় শিফ্ট হচ্ছে বলে সে ছেলের বোলচাল রাতারাতি বদলে ‘কুল’ হয়ে যাচ্ছে।
ডুয়ালিটির নিয়ম, উত্তমকে ভালোরকম প্রতিষ্ঠা করতে গেলে অধমও যোগাড় করতে হয়। তা কলকাতা কত চকচকে সেটা প্রমাণ করতে গেলেও তো কনট্রাস্টিং এলিমেন্ট লাগবে। – আন্দাজ করা যাচ্ছে নিশ্চয়ই? পুরুলিয়া জেলায় স্কুল, সেখানে আর গেঁয়ো এলিমেন্টের অভাব?
বিদ্যাপীঠের প্রতি ব্যাচেই কয়েকজন ছেলে থাকত যারা একদম ভূমিপুত্র, সানস অফ দ্য সয়েল, খাস পুরুলিয়ার ছেলে। আমাদের ব্যাচেও ছিল। আমরা শিলিগুড়ি-দিনাজপুর-কলকাতার ছেলেরা এগারো বছর বয়সে ক্লাস ফোরে ভর্তি হয়ে মাহাতো, বাউরি, মুর্মু, মুড়া – এইসব নতুন পদবীর সাথে পরিচিত হতাম। পুরুলিয়ার ছেলেদের কথার টান আলাদা, তাদের মুখের বাংলাটাই যেন আলাদা। আমি ঢাকাই বাঙালের ঘরে জন্মেছি, বাংলা অনেকরকম হয় সেটা জানি। এটা আরেকরকম বাংলা, বেশ ভালো কথা।
এইট-নাইনে উঠে জিনিসটা আর কারো কারো কাছে তত সরল থাকল না। আমরা মহাশ্বেতা দেবী না পড়েই এমনি এমনিই নিজেরাই ‘সাবঅল্টার্ন’ শিখে ফেললাম।
কলকাতা-গ্রুপের ছেলেদের দেখতাম নিজেদের মধ্যে আকছার পুরুলিয়ার ছেলেদের নিয়ে বিশ্রীরকম হাসাহাসি করতে। ওদের কথা বলার বাঁকা টান, ওদের গায়ের কালো রঙ, ওদের কখনো আইনক্সে সিনেমা না দেখা, ওদের যখন খুশী ‘সিটি সেন্টার’ যেতে না পারা , – ইস্যুর অভাব ছিল না। কলকাতার লোকেরা বর্ধমানকেই ঠিক সভ্যতা বলে গ্রাহ্য করে না, হাওড়াও ওই একরকম মফস্বল ছাড়া আর কী, – পুরুলিয়া তো তাদের কাছে স্রেফ হার্ট অফ ডার্কনেস। সেখানকার ছেলেরাও তো বেসিকালি গ্লোরিফায়েড আদিবাসী, তাছাড়া আর কি। অ্যাকচুয়ালি তো ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস।
এই ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস পুরুলিয়াওয়ালাদের আপস্কেল কলকাতাওয়ালারা একটা নাম দিয়েছিল, “ল্যাহ্যাঁ”। নামটা উচ্চারণ করে নিন একবার, – “ল্যাহ্যাঁ”। উচ্চারণ করলে বোঝা যায় যে ঝাড়খণ্ডী উপভাষার যে উচ্চারণগত টান, তার প্যারডি করে এই অসাধারণ শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে। পুরুলিয়ার টানে কথা বলা পুরুলিয়া-মার্কা আধগেঁয়ো স্বভাবের যেসব ছেলে, তারা সবাই তাই ‘ল্যাহ্যাঁ পার্টি’। ল্যাহ্যাঁ পার্টিদের কলকাতাওয়ালারা ঘেন্না করত। কলকাতার কেউ পুরুলিয়ার কারো প্রেমে পড়ত না, পড়লে কেসটা অসবর্ণ হয়ে যায়। এদের কেউ পুরুলিয়ার ওদের সঙ্গে বেশী ঘনিষ্ঠতা করলে তাকে চটুল প্রশ্ন শুনতে হত, “ভাই তুই কি ল্যাহ্যাঁ হচ্ছিস নাকি রে!’
পুরোটাই অবশ্য নিজেদের গ্রুপের মধ্যে। খোলাখুলি তো করা যায় না, সবাই থাকি একসাথে, খাই ঘুমাই স্নান করি খেলতে যাই একসাথে। পরীক্ষার আগে গ্রুপ স্টাডি করি একসাথে। ম্যাচের আগে টীম বানাই একসাথে। সত্যি সত্যি বয়কট তো আর হয় না। কাজের ক্ষেত্রে কোনোরকম ঝুটঝামেলা কেউ কখনো করত না। এসব ভেতরের ছুঁৎবাই নিয়ে নাড়াচাড়া চলত ব্যক্তিগত আড্ডার সময়। ‘ল্যাহ্যাঁ পার্টি’-র সবাই প্রায় সবসময়েই বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র হত, আর তার দরুণ বাংলা-ইংলিশ দ্বন্দ্বটা ওদের ক্ষেত্রে আরো প্রকট হয়ে উঠত।
শুধু ছেলেরা নয়, কলকাতাবাজিতে জড়াত গার্জেনরাও।
একবার শোনা গেল কলকাতার গার্জেনরা দল বেঁধে সেক্রেটারী মহারাজের কাছে গিয়ে দাবী জানিয়েছে, ছেলেদের টিফিন বদলাতে হবে। – আমাদের সাতদিন সাতরকম বিকেলের টিফিন রুটিনবাঁধা ছিল। সবচেয়ে পপুলার দুটো আইটেম ছিল চিকেন পরোটা, আর মোগলাই। তা কলকাতার গার্জেনদের দাবী, ওগুলো কেন টিফিনে রাখা হবে। ওগুলো তেলের খাবার, স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ, ওগুলো রাখলে তো চলবে না। বদলান। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রাখুন। – সেক্রেটারী মহারাজ অবশ্য এই বদুপদেশে পাত্তা দেননি। কিন্তু এই দাবী জানানোর ব্যাপারটাই ইন্টারেস্টিং। আমি আন্দাজ করতে পারি, দল বেঁধে বসে কথা বলতে বলতে কোনো এক সর্বজ্ঞ ক্যালকাটান গার্জেনের ব্রেনে এই আইডিয়া জন্মায়। তারপর তিনি সেটা নিয়ে প্রফেশনালি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন, এবং তারপর প্রোঅ্যাকটিভলি আর খান পাঁচেক কলকাতাবাসী গার্জেনকে প্রবলেমটা সাকসিংক্টলি বোঝান, এবং তারপর বোল্ডলি সেটা নিয়ে গিয়ে মহারাজের কাছ থেকে সিস্টেম্যাটিক কারেকটিভ মেজারস্ ডিমান্ড করেন। – মানে, স্টাইলই আলাদা।
টিফিন দিয়ে শুরু হয়েছিল। বজ্জাতিটা আলাদা উচ্চতায় এসে পৌঁছল হায়ার সেকেণ্ডারীর সময়, পড়াশোনা নিয়ে। – এটা নিয়ে আসলে একটা আলাদা পার্ট লেখা যায়। আমি এখানে সংক্ষেপে সারছি।
ইলেভেন-টুয়েলভের সময়টা যেহেতু প্রাক-জয়েন্ট, প্রাক-আইআইটি সময়, তাই সেসময়ে ছেলেদের মধ্যে এবং গার্জেনদের মধ্যে প্রতিযোগিতার নোংরামিটা একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসত। কলকাতা শহর কোচিং সেন্টার এবং প্রাইভেট টুইশানির লাসভেগাস, কলকাতার গার্জেনরা তাদের এতদিন ধরে এতটাকা খর্চা করে বড় করা বাচ্চাগুলোর ভবিষ্যৎ যাতে নিশ্চিত করা যায়, সেইজন্যে উঠেপড়ে লাগল।
বিদ্যাপীঠ আবাসিক স্কুল, সেখানে বাচ্চাকে ভর্তি করলে তো আর বাড়িতে রেখে আকাশ-ফিটজি-তে পাঠানো যায় না! তাই কলকাতাওয়ালারা নিজেরা ঠিক করেছিল তাদের বাচ্চারা ছুটিতে যে যে জায়গায় কোচিং যায়, সেইসব কোচিং বা তার সিমিলার রিপ্লেসমেন্ট বিদ্যাপীঠে ঢোকাতে হবে, যাতে বাচ্চাদের মক টেস্ট মার না যায়। মাসে মাসে নতুন নতুন কোরেসপনড্যান্স কোর্স, নতুন নতুন গেস্ট লেকচারার আসতে লাগল কলকাতা থেকে, যারা বড় শহরে বড় টিউশনি করে স্বনামধন্য। স্বরূপ স্যার বলে একজন এল, কলকাতাওয়ালারা তার বিরাট ফ্যান, তার ফিজিক্স যত ঘ্যাম, তার চেয়ে বেশী ঘ্যাম তার চশমা, স্লিম মোবাইল, বোলচালের স্টাইল। এই স্বরূপ স্যার নরেন্দ্রপুরেও গেস্ট লেকচারার হয়ে যেত, রীতিমত একাই একটা প্রতিষ্ঠান।
পরে জানা গিয়েছিল স্বরূপ স্যার আসলে একজন ফ্রড। ফিজিক্স আসলে জানত না। বোলচাল দিয়ে কিছু ছাত্র আর কিছু ইনচার্জকে বোকা বানিয়ে লোকটা নিজের বিজনেস চালাত। হয়তো এখনও চালায়। প্রতি বছরই কিছু মেধাবী ছাত্রের কাছে তার কারচুপি ধরা পড়ে, প্রতি বছরই নতুন ব্যাচের গার্জেনরা এসে তার কোচিং-এ নতুন নতুন ভেড়া ভর্তি করে দিয়ে যায়।
কোচিং-এর দিকটা ছাড়াও অন্য দিক ছিল। ক্লাসে স্যাররা যখন পড়াতেন, কিছু ছেলে ছিল যারা পড়ানোটাকে হাইজ্যাক করে নিত। প্রমিত হালদার ছিল এরকম একজন। ভালো রেজাল্ট করত বরাবরই, এইচ.এস-এ এসে র্যাঙ্ক করার নেশা আরো পেয়ে বসল। ছুটির সময় প্রাইভেট টুইশানে আগে থেকে চ্যাপ্টার কভার করে আসত, আর পরে যখন আমরা ক্লাসে প্রথমবার সেই জিনিস শুনছি, স্যারের বক্তব্য ধরার চেষ্টা করছি, তখন আগ বাড়িয়ে নানারকম অ্যাডভান্সড প্রশ্ন করে পড়ানোর তাল কেটে দিত। ইলেভেন-টুয়েলভের সায়েন্সের চ্যাপ্টার কীরকম জটিল আর কমপ্যাক্ট হয় সে ধারণা যার আছে সে-ই বুঝবে এটা করা কতখানি বিপজ্জনক। স্যার পড়ানোর তোড়ে এক পয়েন্ট থেকে আরেক পয়েন্টে এগিয়ে চলে যেতেন, প্রমিত হালদার স্যারের কথায় তাল দিয়ে পাল্লা দিত, আর আমরা বোকার মত হাঁ করে দেখতাম কী পড়ানো হচ্ছে হঠাৎ করে আর কিছু মাথায় ঢুকছে না। — যারা ভালো ছাত্র ছিল, বা যারা নিজেরাও বাড়িতে ওস্তাদ টিউটরের কাছে পড়ার সুযোগ পেত, তারা সামলে নিত, কোনো অসুবিধে হত না। ডুবতাম আমরা যারা সাধারণ মানের ছেলে ছিলাম, তারা। হায়ার সেকেন্ডারীর সিলেবাসে একটা কনসেপ্ট পরিষ্কার না হলে পরের বাকি দশটা কনসেপ্ট কিচ্ছু বোঝা যায় না।
এবং এর সাথে মিশত হস্টেলজীবনের রঙ। কেরিয়ারের জন্য মানুষকে অনেকরকম কষ্ট করতে হয় তো। আমাদেরই ব্যাচে এরকম ঘটনা ছিল যেখানে এক ছেলে আরেক ছেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন শারীরিক সম্পর্ক করেছিল শুধু এই কারণে যাতে পরস্পরের পড়াশোনার সুবিধে তোলা যায়। প্রেম ছিল অছিলা, আসল লভ্য ছিল মূল্যবান সহযোগিতা ও নোটস। – নিজেদের স্বার্থে সারাবছরের ক্লাস ও কোচিং-এর গতিপ্রকৃতি ঠিক করার জন্য নানারকম কলকাঠি নাড়ত এই এক্জাম ওয়ারিয়ররা। আমার গায়ে এসবের আঁচ কিছুই লাগেনি, কারণ আমি না দিয়েছিলাম জয়েন্ট, না হয়েছিলাম ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার। আমার কেরিয়ার পুরোটাই ট্যানজেন্ট হয়ে অন্যদিকে বেরিয়ে গেছিল। কিন্তু আমি এটুকু জানি যে ওই দু’বছর স্বাভাবিক ক্লাস করার সুযোগ পেলে আমি যতটুকু লেখাপড়া শিখতে পারতাম, – ভালো ছাত্রদের ভবিষ্যৎ গড়ার স্বার্থে তার আশিভাগই উড়ে চলে গেছে।
আর অন্য কোন ছেলের কেরিয়ারের কতটা ক্ষতি হয়েছে, সেই হিসেব এতদিন পরে নিয়ে আর কোনো লাভ নেই।
(চলবে)