পঞ্চম অংশ
“ঠাট্টা”
“- (He) was definitely a different kind of duck. He wore the same tattered jacket, be it hot or cold, always hugged the wall as he walked down a hallway. He was off.
– ‘Off isn’t tolerated in high school.
– Well, certainly not in the 30 years I’ve been doing this job.”
ক্লাস নাইনের ইংরেজী বইয়ে আমাদের একটা গল্প পাঠ্য ছিল, রাস্কিন বন্ডের লেখা ‘মোস্ট বিউটিফুল”। সুরেশ বলে একটা ছেলের কথা ছিল সেই গল্পে। কুৎসিত চেহারা আর মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকার দরুণ তাকে বাকি ছেলেরা নিষ্ঠুরভাবে মারত আর খ্যাপাত। গল্পটা অনেকের মনে আছে হয়তো।
যখন এই গল্পটা পড়া হয়েছিল, আশ্চর্যের বিষয়, আমাদের কারো মনে ব্যাপারটা খুব নাড়া দিয়েছিল বলে মনে পড়ে না আমার। কথাটা বলছি কারণ সেই গল্পে যে ধরনের নিষ্ঠুরতার কথা দেখানো ছিল, নিজেদের মধ্যে সেই একইধরনের নিষ্ঠুরতা আমরা হামেশাই দেখতাম।
বাংলা মিডিয়াম-ইংলিশ মিডিয়াম নিয়ে কথা হল এই কিছুদিন আগেই। সেখানে একধরনের হ্যাটা করার প্রবণতা নিয়ে লিখেছিলাম। ইংরেজী স্মার্ট, বাংলা গাঁইয়া। যার জন্য হলদীরামসের প্যাকেট আসে সে স্মার্ট, যার জন্য প্লাস্টিকের কৌটোয় করে চালভাজা আসে সে গাঁইয়া। ব্যাকস্ট্রীট বয়েজ শোনার অভ্যাস থাকলে স্মার্ট, আর ইংলিশ গান-টান কোনোকালে না শুনে থাকলে গাঁইয়া।
টাকাপয়সার গরমটা কেউ বড় একটা দেখাত না। আমরা পড়তাম পুরুলিয়ায়, আমাদের বিদ্যাপীঠের নিয়ম ছিল হস্টেলেরও একটা নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম থাকবে। কারণ, যে ছাত্ররা পড়তে এসেছে তারা কেউ কোনো বড়লোক ডাক্তারের আদরের দুলাল, আর কেউ হয়তো বা পুরুলিয়ার কোনো অভাবী সংসারের ছেলে, কনসেশন পেয়ে ভর্তি হয়েছে। এরকম অবস্থায় যদি সবাইকে বাড়ি থেকে আনা জামাপ্যান্ট পরতে দেওয়া যায়, তাহলে একটা অস্বস্তিকর বৈষম্য অনবরত চোখে পড়তে বাধ্য। সুতরাং বাঁধাধরা জামাকাপড়, সবার পরনে একই জামা একই গেঞ্জী একই প্যান্ট, প্রবলেম সলভ্ড। এই সাম্যবাদ আমাদের মেজাজেও চারিয়ে যেত। এমনিতে টাকাপয়সার ব্যবধানটাকে কমবয়েসীরা খুব একটা পাত্তা দেয় না। সেটা দিত গার্জেনরা, কিন্তু সেটা আমরা সেসময় খুব একটা বুঝতাম না, অন্তত ফাইভ-সিক্সের বয়সে তো নয়। সাধারণত।
ফোরে একবার মনে আছে একটা ঘটনা হয়েছিল। নবারুণ আমাদের ক্লাসে পড়ত। পুরুলিয়ার ছেলে, ওর বাবা ছিলেন আমাদেরই স্কুলের হেড পিওন। আমাদের সভ্য সমাজের ভাষায় ক্লাস-ফোর কর্মচারী। সেটার জন্য নবারুণের একটা প্রচ্ছন্ন হীনমন্যতা ছিল, যদিও তার কোনো বহিঃপ্রকাশ দেখা যেত না। একদিন ক্লাসে বসে আছি, নবারুণের সঙ্গে মলয়ের কী নিয়ে যেন ঝগড়া লেগেছে। এ ওকে যা পারছে বলছে। হঠাৎ মলয় বলল, “তোর বাবা তো ডাইনিংহলের সামনে ঘন্টা বাজায়!”
কথাটা মহারাজের কানে উঠেছিল এবং মলয়কে তার জন্য ভালোরকম খেসারত দিতে হয়েছিল। সোশ্যাল ক্লাস নিয়ে বড়রকম ঘটনা এটা ছাড়া তেমন মনে পড়ে না। কালচারাল ক্লাসিজম ছিল অন্য এক ধরনের, কিন্তু সেকথা পরে বলব।
সবচেয়ে বেশী যেটা ছিল সেটা হল চেহারার অজুহাত তুলে ক্ষ্যাপানো। এর একটামাত্র উদাহরণ দেব, কারণ এরকম ব্রুটাল উদাহরণ নিজের চোখে আমি আর দেখিনি।
অঘোর দত্ত আমাদের ক্লাসমেট ছিল। ও যে মস্ত বড় দোষটা করে ফেলেছিল সেটা হচ্ছে কালো হওয়া। অঘোর খুবই কালো ছিল, উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ কোনোমতেই বলা চলে না। আমাদের দেশের নিয়ম হল ব্রিটিশদের সঙ্গে তুলনা টানার সময় কালোকে গ্লোরিফাই করা, হাম কালে হ্যাঁয় তো ক্যায়া হুয়া দিলওয়ালে হ্যাঁয়, আর নিজেদের মধ্যে তুলনা টানার সময় কালোকে গালি দেওয়া। সবচেয়ে কিউট উদাহরণ হল কমলাকান্তের ‘লোকে বলে কালী কালো, আমার মন তো বলে না কালো রে।’ ‘কালো’ কথাটা ‘খারাপ’-এরই নামান্তর। – আমাদের অঘোর কালো তো ছিলই, এবং খুব সম্ভবত আশৈশব সে নিয়ে কথা শুনে আসার ফলেই, তার কথা বলা-কওয়ার স্মার্টনেসও ততটা ছিল না।
আমার মনে হয়, ক্লাস ফোরের প্রথম দিন থেকে আরম্ভ করে ক্লাস টেনের শেষ দিন পর্যন্ত, প্রতি দিন, এক দিনও বাদ না দিয়ে প্রতি দিন, রোজ, রেগুলার অঘোরকে এই নিয়ে রাগানো হয়েছিল। আমি এমন একটা দিনও মনে করতে পারি না যে অঘোরকে নিয়ে ছেলেদের মধ্যে কথা উঠেছে, অথচ অঘোরের গায়ের রঙ নিয়ে হাসাহাসি করা হয়নি। সত্যি কথা বলতে কি গায়ের রঙ ছাড়া অঘোরের আর কোনো কিছু আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক ছিল বলে আমার মনে পড়ে না।
ক্লাস ফোরে একবার, – নবীন সাহা ক্রমাগত অঘোরকে ক্ষেপিয়ে যাচ্ছে। রাক্ষস, জংলী, নরখাদক, যা ভেবে পায় বলে যাচ্ছে। অঘোর রাগ সামলাতে পারত না। প্রতিদিন একটা জিনিস নিয়ে অনর্গল খোঁটা দেওয়া হলে পৃথিবীর কেউই সামলাতে পারে না। অনেকক্ষণ সহ্য করার পর অঘোর থাকতে না পেরে নবীনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে মারতে শুরু করল, নবীনও পাল্টা হাত-পা ছুঁড়ছে, হঠাৎ চীৎকার। কী ব্যাপার? – না মারপিটের মধ্যে রাগে অন্ধ হয়ে অঘোর নবীনের কাঁধে কামড়ে দিয়েছে। দাঁতের দাগ বসে গেছে, রক্ত বেরিয়েছে।
ব্যাস, আর যাবে কোথায়। সবাই শুরু করে দিল একধার থেকে ছিছিকার আর মাথা নাড়া। ভাবা যায়, কামড়ে দিচ্ছে, এ কি মানুষ? নরখাদক বলে ক্ষ্যাপানো হয় এ তো সত্যি নরখাদক! কী রে ভাই, এর সঙ্গে থাকব কী করে রে, কামড়ে ফামড়ে দিচ্ছে! – ওয়ার্ডেনের কাছে খবর যেতে ওয়ার্ডেন এলেন, এসে অঘোরকে খুব একচোট ঝাড় দিলেন। সেই ঝাড়ে বোধবুদ্ধি, মানবিক ব্যবহার, এইসমস্ত কীসব যেন ছিল। আন্দাজ করাই যায়। পাশবিকতা সম্বরণ এবং মানবিকতায় উত্তরণ। সে মিটে গেল তারপর। নরখাদক ট্যাগটা কিন্তু কেউ ভুলল না।
এ সবে শুরু। ফোর গিয়ে ফাইভ এল, ফাইভ থেকে সিক্স, সিক্স থেকে সেভেন, এইট, নাইন, টেন। অঘোর যেমন কালো ছিল তেমন কালোই থেকে গেল। আমাদের রিফাইনমেন্ট বাড়ল। ক্লাস সেভেনে না এইটে যখন ক্লাসে কার্বনের আইসোটোপ পড়ানো হল, অঘোরের নাম হল ‘ভুসা কালি’। মানে, এক হীরা বাদ দিয়ে বাকি যেকোনো ফর্মের নামই ব্যবহার করা চলত। সবসময় জোরে চেঁচিয়ে ক্ষ্যাপাতে হবে তার মানে নেই। হয়তো স্টাডি চলছে, একজন ভৌতবিজ্ঞান বইটা নিয়ে অঘোরের কাছে গিয়ে বলল, ‘এই দত্ত দত্ত শোন না, এই চ্যাপ্টারটা একটু বুঝিয়ে দিবি!’ – তাকিয়ে দেখা গেল চ্যাপ্টারটা হল কার্বনের আইসোটোপ। স্টাডির মধ্যে জোরে কথা বলা যায় না, অঘোর রেগে চাপা গলায় তর্জন করল, চালাক বালক খি-খি করে নীচু গলায় ‘ভুসাকালি ভুসাকালি’ বলে আস্তে করে সরে গেল। এই খুব ছোটো ছোটো কথাগুলো, রোজদিনকার এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হ্যামারিংগুলো যে একজন মানুষের আত্মশ্রদ্ধাকে কোন তলানিতে নিয়ে আসতে পারে তা আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারব না। প্রতিটা টিটকিরির প্রতিটা সিলেবল্ যে অঘোরের গায়ে কীরকম জ্বালা ধরাত, সেটা বোঝা আমাদের অনুভূতির বাইরে। প্রতিদিন। প্রতি দিন।
চেহারা নিয়ে কোনোদিন আওয়াজ খেয়েছেন? যদি কেউ খেয়ে থাকে তাহলে সে জানে কেমন লাগে। মানুষ যতই আধুনিক হোক আর ‘স্কিন-ডীপ’ আর ‘সেপিওসেক্সুয়াল’ আউড়ে দর্শন কপচাক, নিজের চেহারা নিয়ে সে যতটা অনুভূতিপ্রবণ ততটা আর কোনো কিছু নিয়ে নয়। জীবনের আইনে জীনের অক্ষরে লেখা আছে আমরা শরীরকেন্দ্রিক জীব। খালি পেটে ফিলজফিও হয় না।
অঘোরকে নিয়ে হাসাহাসি করাটা আমাদের রিফ্লেক্সে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। এখনও এই লেখা পড়ে আমরা হেসে উঠতে পারি। যেকোনো কালো জিনিসের নাম আমরা ব্যবহার করতাম ওকে ক্ষ্যাপানোর জন্য। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলত নতুন নতুন কালো জিনিসের নাম ভেবে বার করার। গাড়ির টায়ার, ছাতা, দাবার গুটি, ইলেকট্রিকের তার, লোডশেডিং। যা ভাবা যায়। এমন হয়েছে যে বিদ্যাপীঠ থেকে বেরোবার পর যখন কলেজে পড়ি, তখন ফোনে কোনো বন্ধুর সাথে এক ঘন্টা ধরে অঘোর দত্তের কেস নিয়ে গল্প করে হেসে কুটিকুটি হয়েছি। এখানে যা লিখছি, তার প্রতিটা গল্প আমাদের স্কুললাইফের এক একটা অবিস্মরণীয় জোক। এখানে লিখছি নিজের সামনে একটা আগুনের আয়না খাড়া করে। নিজের মুখের দিকে ক্রমাগত তাকিয়ে। একটা উদাহরণ দিই।
অডিটোরিয়ামে ক্যুইজ চলছে। অডিও রাউণ্ড হবে। স্যার ক্যুইজমাস্টার, একটা ওয়াকম্যানে কোনো একটা গানের এক কলি বাজিয়ে মাইকের সামনে ধরবেন, সেই শুনে বলতে হবে কোন গান। গণপতিদা কনডাক্ট করছেন। – চলতে চলতে একটা গান এল, সে আর কেউ চিনতে পারে না। স্টেজে যে চারটে টীম ছিল একে একে সবার কাছে কোশ্চেন গেল পাস হয়ে হয়ে, তারা কেউ পারল না। তারপর কোশ্চেন পাস হয়ে এল অডিয়েন্সের কাছে। দু’জন ট্রাই করল, হল না। অঘোর দত্ত গান গাইত, ও হাত তুলল। স্যার ওকে দাঁড় করালেন, অঘোর দাঁড়িয়ে আন্সার দিল “আজি বিজন ঘরে নিশীথরাতে’ (এটাই কারেক্ট ছিল), আর সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ দুম করে সারা অডিটোরিয়ামে লোডশেডিং হয়ে গেল।
এবং পরমুহূর্তে সারা অডিটোরিয়ামে হা-হা হাসির হর্রা, আর সম্মিলিত হোও-হোও চীৎকার।
টেনের পর আর অঘোর ইলেভেন-টুয়েলভে বিদ্যাপীঠে ফেরেনি। আমি জানতাম ফিরবে না। নিতান্ত নির্বোধ না হলে যে কারো বুঝতে পারার কথা যে ফিরবে না।
শুধু গায়ের রঙ নয়, অন্য অনেক জিনিস ছিল ক্লাসের নানারকম ছেলেকে ক্ষ্যাপানোর। আমার নিজের যেমন পরিচিত ছিল ‘পাগল’ হিসেবে। মানে, আজকাল তো সবাই নিজেরাই নিজেকে পাগল নাম দেয়, মানে পাগল হওয়াটা এখন ‘ইন’। রোমান্টিক, অফবিট, ইত্যাদি। আমি সেরকম ফ্যাশানেবল পাগল ছিলাম না। মুখে গোঁফদাড়ি থাকত, ঝাঁকড়া চুল ছিল। সুমনের গানটা শুনেছেন তো? সেরকম ব্যাপার। কিন্তু যতদিনে সেভেন-এইটে উঠেছি ততদিনে আমি ‘পাগল’ বিশেষণটা মাইণ্ড করতাম না, গায়ে মেখে নিতাম, আমার নিজের কাছের বন্ধুরাও ওটা ব্যবহার করত ভালোবাসার ডাকনাম হিসাবে। একজন, সে কাছের বন্ধু ছিল না, সে একটা আস্ত ছড়া লিখেছিল আমাকে নিয়ে, প্রথম দুটো লাইন ছিল “মান্টা তোমার বিটলে দাড়ির অন্দরে/ ছারপোকারা বাসা বানায়, ঘর করে।” ছড়া লিখে সে আমাকেই প্রথম দেখিয়েছিল, ক্লাসশুদ্ধু চাউর করেনি। সেসব ঠিক আছে। যদিও নাইনে উঠে অবস্থা পাল্টাল, ‘পাগল’-এ শানাচ্ছে না দেখে আমাকে নাম দেওয়া হল ‘সেয়ানা পাগল’, – কিন্তু সে গল্প করতে বসলে এখানে স্পিনঅফ আত্মজীবনী হয়ে যাবে, বাদ থাক। অন্য আরেকজনের কথা বলি।
অভয় বক্সী আমার সেকশনেই ছিল বাংলা মিডিয়ামে যতদিন পড়তাম, তারপর আবার রুমমেট হিসেবে পেলাম ক্লাস সেভেনে উঠে। অভয় ছিল বেজায়রকমের তোতলা। এবং সামনের দাঁতগুলো বড় ছিল, একটুখানি সামনের দিকে ঝুলে থাকত। – এই দাঁত আর তোতলামি নিয়ে অভয়কে কম অত্যাচার সহ্য করতে হয়নি। ‘কম হয়নি’ বললে খুবই কম হয়। এখন আমরা জানি, নার্ভাস লাগলে মানুষ তুতলে যায় আরো বেশী। তখন ফান্ডাটা জানতাম, কিন্তু পাত্তা দিতাম না। চুটিয়ে খ্যাপাতাম অভয়কে। সেসব লিখে গল্প করছি না আর, কারণ সেই সবই আমাদের কাছে সুখস্মৃতি। কারণ আমরা থাকতাম খ্যাপানোর এধারে। অঘোর দত্তকে আমি নিজে কোনোদিন কালো বলে টিটকিরি দিইনি, তাই ওর গল্প করাটা আমার কাছে সহজ হয়েছে। অভয়কে নিয়ে আমি নিজেই বহু খোরাক তৈরী করেছি। রুমমেট ছিল, আর খানিকটা স্যার-ঘেঁষা স্বভাবও ছিল ওর, – সব মিলে আমরা সবাই মিলিতভাবে ওকে কাল্টিভেট করতাম। মারতামও। ও অঘোরের মত দুম করে রেগে গিয়ে কথা হারিয়ে ফেলার ছেলে নয়, চেষ্টা করত আমাদের পাল্টা খ্যাপাতে, – আর সেই পাল্টা দিতে গিয়ে অবধারিতভাবে তোতলাত, আর আমরা গিয়ে আনতাবড়ি দুম দুম করে দু’এক ঘা কিল মেরে আসতাম। বিছানায় ফেলেও পেটাতাম কখনো কখনো, কয়েকজন মিলে। খুব সিরিয়াস নয়, তাহলেও মার মারই।
কিন্তু অভয় বক্সীর সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়নি কখনো। ওই সব মারামারি, হাসাহাসির পরেও আমরা বন্ধু ছিলাম। ও আমাকে পাগলা বলে খ্যাপাত, আমি ওকে খড়্গদন্তেষু বলে খ্যাপাতাম। ক্লাসের যেসব হিরোয়িক ‘দাদা’-দের কোনোরকম উইকনেস ছিল না, তাদের শ্রেণীভুক্ত কোনোদিন হইনি বলেই হয়তো আমাদের মধ্যেকার আটপৌরে রাস্তাটা বরাবর খোলা ছিল।
(চলবে)