নীল-কালো (৩)

তৃতীয় অংশ

“রেপ”

“Everything in the world is about sex except sex. Sex is about power.”

চুরির গল্পে একজন লিখেছে, এগুলোর সাথে আমাদের বৃহত্তর সমাজের খুব ভালো মিল আছে। – আসলে, আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমরা কেউ কেউ বিদ্যাপীঠে থাকতেই বলাবলি করতাম, বিদ্যাপীঠ আসলে পুরো সমাজের একটা সংক্ষিপ্ত, বনসাই ভার্সান। কলেজী ভাষায় একে বলে মাইক্রোকজম। বাইরের দুনিয়ায় যা বৃহৎ আকারে দেখা যায়, তারই ছোট্ট রূপ, ক্যাম্পাসের চার দেওয়ালের ভেতর। দুনিয়ায় যেমন রাজা উজির কোটাল সওদাগর রাজপুত্র রাজকন্যা চোর ডাকাত পুরোহিত বিদূষক সবরকম আছে, তেমন আমাদের ক্যাম্পাসের ভেতরকার ‘বিদ্যাপীঠ-পরিবার’-এও এই সবরকমই আছে।

আসলে যে ওটা লিখেছে সেও বিদ্যাপীঠের। জানে বলেই লিখেছে। আরেকটা কথা ও লিখেছে, – বিদ্যাপীঠে আমাদের পরিসরটা এত সীমিত ছিল যে আমরা কেউ কাউকে ঠিক পার্মানেন্টলি এড়িয়ে চলতে পারতাম না। তাই খুব বিশ্রীরকম অপরাধের শিকার হলেও, অপরাধীকে দৈনন্দিন জীবনে স্বীকার করে নিতেই হত। আমাদের সেসময়টা কোনো #মীটু ছিল না।

রেপ ছিল খুব নিত্যনৈমিত্তিক একটা ব্যাপার।

একদম ছোট থেকেই, মানে ক্লাস ফোর থেকেই বোঝা যেত কাদের চেহারা নজর কাড়তে চলেছে আগামী সাত বছরে। আমরা ইনিশিয়েটেড হয়ে যেতাম শিগগিরই, হায়ারার্কিও তৈরী হয়ে যেত দেখতে দেখতে কিছুদিনের মধ্যে। ছোট থাকতে আমাদের দুটো টার্ম চালু ছিল, একটা হল ‘বেস্টু’, আর আরেকটা হল ‘লালু’। ডেফিনিশন দিই। — ১) বেস্টু. noun. Origin: Best-Two > Bestwo. [INFORMAL] দুইজন ছেলে, যারা পরস্পরের প্রণয়ী; দুইজন একে অপরের বেস্টু. উদা: “জানিস না, বিনয় আর বাদল দু’জন বেস্টু!” “কীরে, তুই নাকি দীনেশের বেস্টু?” — ২) লালু. noun. [INFORMAL] যদি কোনো সিনিয়র ছেলে কোনো জুনিয়র ছেলের প্রতি প্রণয়াসক্ত হয়, তাহলে জুনিয়র জন সিনিয়র জনের লালু; যদি কোনো মহারাজ, শিক্ষক বা অশিক্ষক কর্মীর কোনো বিশেষ ছেলের প্রতি দুর্বলতা বা টান থাকে, তাহলে সেই ছেলে সেই মহারাজ/শিক্ষকের লালু (teacher’s pet). উদা: “বিনয় আগে বাদলদার লালু ছিল, এখন দীনেশদার লালু হয়েছে।” “বিনয় তো পাতি লালুগিরি করে নম্বর পায়, নাহলে বাদলই হায়েস্ট পেত।”

এই বেস্টু আর লালু দিয়ে শুরু হত। যারা একটু ফুটফুটে দেখতে লোকে যে তাদের প্রেমেই পড়বে সে তো স্বাভাবিক। এখানে একটা কথা বলি, যাতে পরে বিতর্ক না হয়। এই যে ‘ফুটফুটে’ কথাটা লিখলাম, এটা কিন্তু বড়দের দৃষ্টিকোণ থেকে। সমবয়সীদের চোখে কিন্তু ওই ফুটফুটে চেহারা, ওই কিউটনেসটাই আঠা। মুরগীছানার গায়ের রোঁয়া যেমন আসলে পালক, সেরকম শৈশবের সুইটনেস আদতে ভবিষ্যতের সেক্স অ্যাপিল। এটা সর্বজনবিদিত সত্য, বায়োলজিক্যাল ট্রুথ। চেহারার সিমেট্রি, শরীরের মাস্‌ল টোন, চামড়ার মসৃণতা এবং রঙ, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, এমনকী গলার স্বর, – একটা মানুষের যৌন আকর্ষণীয়তার পেছনে এই সবক’টা ফ্যাক্টর কাজ করে। এবং সেটা করে শৈশব থেকেই। যতদিনে একজন মানুষ দশ পেরিয়ে বয়ঃসন্ধির দোরগোড়ায় পা রাখছে, ততদিনে তার শরীরে সেকেণ্ডারী সেক্সুয়াল ক্যারেকটারিস্টিকস প্রকাশ পেতে শুরু করে দিয়েছে।

আমাদের মধ্যে যারা দেখতে সুন্দর হত, লোকে তাদের প্রেমেই পড়ত বেশী। কিন্তু এই তরফে যে সবসময় সম্মতি থাকত এমন নয়। আর সম্মতি থাকলেও, একটা ছেলে কতজনের প্রেমকে রেসিপ্রকেট করতে পারে, অ্যাট আ টাইম একজনের বেশী তো নয়? বাকিরা কী করবে? সাধারণ হিসেবে পাড়ার আর দশজন সিঙ্গল ছোকরা কী করে? না, ঠোঁট চাটে। আমাদের বেলায় এটা ছিল, এবং একটু ডেয়ারিং হতে রাজী থাকলে আরো কিছু থাকাও অসম্ভব ছিল না।

শিবানন্দ সদনের ঘটনা, একদিন সন্ধের ভজনের পর শুনি হঠাৎ পাশের ধামে কী যেন গোলমাল লেগেছে। একটু পরে শোনা গেল বিশেষ কিছু না, শ্যামল রায় নিজের বেডে ধুতি-পাঞ্জাবি ছাড়ছিল, এমন সময় হঠাৎ কোথা থেকে দীপ্তেন্দু সেন এসে তার ওপর চড়াও হয়ে তার মুখে কিস করে দুম করে আবার পালিয়ে গেছে। – মাইনর ব্যাপার, লোকে একটু অবাক হয়েছিল, দীপ্তেন্দুর ডেসপারেশন নিয়ে একটু হাসাহাসি হয়েছিল, ব্যাস। সেসব নিয়ে আর কোনো জল গড়ায়নি। প্রেমটেমও কিছু ডেভেলপ করেনি।

জল গড়ায়নি কারণ আগেই বলেছি, শিবানন্দ সদনে কোনো জলই বেশীদূর গড়াত না। জল গড়ানো শুরু হল ক্লাস সেভেনে ওঠার পর, ব্রহ্মানন্দ সদনে এসে।

সেইসময় অনেকরকম জিনিস দেখেছি, শুনেছি আরও বেশী। সবচেয়ে হিংস্র দৃশ্যগুলো সেই সময়কারই। ক্লাস সেভেন-এইটে আমরা একতলার অখণ্ডানন্দ ধামে থাকতাম, আমাদের দুটো বাথরুম ছিল। একটা সময় ছিল যখন দক্ষিণদিকের বাথরুমটাতে প্রায় প্রতিদিন স্নানের সময় কাউকে না কাউকে তার গামছা টেনে নিয়ে কয়েকজন মিলে ‘এনজয়’ করা হত। আমি ও বাথরুমটায় যেতাম না, কিন্তু পেরিয়ে যাবার সময় বাইরে থেকে আওয়াজ পাওয়া যেত। রাজীব নন্দীর কথা মনে আছে। ক্লাসের বেশ কয়েকজনের কাছে ভালোরকম চাহিদা ছিল ‘মাল’ হিসেবে। আবছা আবছা মনেও পড়ে। ছেলেটার লাল রঙের গামছা ছিল। বাথরুমে ঢুকতেই এদিক থেকে ওদিক থেকে গামছা ধরে টান, আর রাজীবের গলায় নিরর্থক ‘এই করিস না – করিস না’ আওয়াজ। একবার টানাটানির চোটে বাথরুমের মেঝেয় পড়ে গিয়ে চোট লেগেছিল। ওই চোটটাই ছিল আউট অফ নর্ম। অন্যগুলো তো রোজকার ব্যাপার।

আমি যখন এইটে পড়ি, তখন আমার রুমমেটদের মধ্যে ছিল সীতেশ আর প্রসেনজিৎ। দু’জনেই ইংলিশ মিডিয়াম, আমারই সেকশন। প্রসেনজিৎ মোটামুটি সাধারণ স্তরের ছেলে, পড়াশোনায় বেশ ভালো এই যা। সীতেশ এদিকে প্রতিষ্ঠিত জক, খেলাধূলা সেবকগিরি ক্যাপ্টেন্সি, সবরকমই পারে, ক্লাসের পুরোনো মস্তানদের মধ্যে সেও একজন। আমার সাথে মাঝেমধ্যে কথা বলত স্পোকেন ইংলিশ চর্চার জন্য। রাতে লাইট অফ হয়ে গেলে মশারির ভেতর শুয়ে শুয়ে কিছুক্ষণ ইংরেজীতে বাক্‌বিনিময়। রোজ না, কোনো কোনো দিন। অন্যান্য দিন কথা বলত প্রসেনজিতের সঙ্গে। নানা প্রসঙ্গ। শুয়ে শুয়ে সেইসব কথা আমার কানে আসত। একদিন শুনি, ক্লাসের কোন্ ছেলের সাথে কে ‘করতে’ চায়, সেই নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

সী: তু কীসকে সাথ করেগা, চান্স মিলা তো?
প্র: হুমম….. হৃষী। (একটুক্ষণ চুপ করে থেকে) আউর, গুলশন।
সী: গুলশন? এঃ!
প্র: তু কীসকে সাথ করেগা?
সী: অমল। সীতাদ্রি। অমলকে সাথ করনা হ্যায় মুঝে। ……. পতা হ্যায়, ম্যায় কর ভী সকতা হুঁ।
প্র: মানে? কীভাবে করবি? এমনি জোর করে?
সী: না জোর করে না। ওতে মজা নেওয়া যাবে না। অন্য প্ল্যান আছে।
প্র: কীরকম?
সী: আমার বাবার চেম্বারের পাশেই একটা ঘরে ওষুধ রাখা থাকে। আমি দেখেছি। একটা আলমারী আছে। ক্লোরোফর্মও রাখে।
প্র: আরিস্সালা। লক থাকে না?
সী: উঁহুঁ। সে আমি ম্যানেজ করে নিতে পারব। – একটা শিশিতে করে খানিকটা আনলেই হল। একদম স্মুথলি যা দরকার হয়ে যাবে।
প্র: অজ্ঞান হয়ে যায় পুরো?
সী: ওই দিয়েই তো অপারেশন করে। পুরো আউট। তবে এখন ক্লোরোফর্ম দিয়েও করে না।
প্র: তাহলে?
সী: আমি বাবাকে অন্য কোলীগদের সাথে বলাবলি করতে শুনেছি। এখন ইউজ করে ‘ঈথার।’ – ওতে আরো তাড়াতাড়ি অজ্ঞান হয়।
প্র: তুই এটা আনতে পারবি বলছিস?
সী: আনাই যায়। এক শিশি আনলে ওতে যা থাকবে তোরও কাজ হয়ে যাবে।
প্র: সাল্লা!

মোটামুটি এইরকম চলল আরো কিছুক্ষণ। তারপর একসময় ওরা ঘুমিয়ে পড়ল না আমিই ঘুমিয়ে পড়লাম, এখন আর মনে নেই। ওরা কিন্তু মজা করছিল না, সত্যিই ভেবে দেখছিল, আইডিয়াটা খাটানো যেতে পারে কিনা। পরে যদিও সীতেশ ক্লোরোফর্ম বা “ঈথার” কিছুই আনেনি, বা হয়তো আনতে পারেনি। খুব সম্ভবত আনার দরকারও হয়নি।

অচেতন অবস্থায় পেয়ে রেপ করার আরেকটা ঘটনা দেখেছিলাম ক্লাস টেনে থাকতে। আমাদের ব্যাচে কুশাগ্র বলে একজনের একটা ক্রনিক অসুখ ছিল, মাঝেমাঝে আচমকা অ্যাটাক হলে ও অজ্ঞান হয়ে যেত। কুশাগ্র পপুলার ‘মাল’ ছিল, এবং সাইজে ছোটোখাটো হওয়ার দরুণ অপেক্ষাকৃত সহজে শিকার হত। একদিন রবিবারই মনে হয়, সকালবেলা, ধামে ছেলেপিলে বিশেষ নেই, আমি বাথরুমের সামনে দিয়ে যেতে যেতে দেখি, বাথরুমের ভেতর কুশাগ্র মেঝেয় পড়ে আছে। মুখে ফেনা, জ্ঞান নেই। আমি তাড়াতাড়ি আমার রুমমেট বিজয়কে ডেকেছি, সে এসেছে, তার সঙ্গে আরেকজন। কুশাগ্রকে ধরাধরি করে রুমে নেওয়ার হবে নাকি ওখানেই জলটল দিয়ে চাঙ্গা করা হবে – আমরা দু’জন এইসব কথা বলছি, এমন সময় তিননম্বর জন বলে, “বিজয়, এই চান্স রে।” “মানে?” “সেন্সলেস আছে ইয়ার। একটুখানি করে নি।” – বিজয় রেগে এক ধমক দিয়ে তাকে চুপ করিয়ে ব্যাপারটা ডিসিপেট করে দিল। – মানে, ঘটল না, কিন্তু ঘটতেই পারত।

সবচেয়ে বড় স্কেলের যে কাণ্ডটা হয়েছিল সেটা বলি। নবেন্দু বলে একজন ছিল ক্লাসে, তার আগাগোড়াই মেয়েলি বলে একটা পরিচিতি ছিল। সৌন্দর্যের জন্য ততটা খাতির না থাকলেও, মেয়েলি ভাবভঙ্গীতে স্বচ্ছন্দ ছিল বলে কারো কারো কাছে তার চাহিদা ছিল অত্যন্ত বেশী। একদিন রাতে একটা বড় ধরনের কেচ্ছা হওয়ার পর জিনিসটা নবেন্দুর পক্ষেও বাড়াবাড়ি হয়ে গেল। আমরা সকালে শুনলাম, নবেন্দু বিদ্যাপীঠ থেকে পালিয়েছে।

বিদ্যাপীঠ থেকে কেউ পালালে সেটা স্যার-মহারাজদের পক্ষে খুব চিন্তার ব্যাপার হত। পালিয়ে কোথায় গেল কেউ জানে না। সোজা বাড়ি গেলে তো সেদিকে অন্তত নিরাপত্তার অর্ধেক সমস্যা মিটে যায়। কিন্তু বিদ্যাপীঠে তো আর শুধু পুরুলিয়ার লোকাল ছেলেরা পড়ে না, সারা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেলেরা এসে পড়ে। তারা কেউ বাড়ি পালাতে চাইলে তাকে আগে বিদ্যাপীঠ থেকে কোনোভাবে পুরুলিয়া জংশন পৌঁছতে হবে, তারপর সেখান থেকে ট্রেন ধরে যেখানে যাবার যেতে হবে। এই পুরো ব্যাপারটায় নিজে আস্ত থাকা খুব সোজা কথা নয়। আমাদের সঙ্গে তখন টাকাপয়সাও খুব বেশী থাকত না, কারো কাছে একশো টাকা থাকলে সে-ই অনেক। আর মোবাইল-টোবাইলের তো প্রশ্নই ওঠে না।

নবেন্দু পালাল, এই টেনশনের চেয়ে বড় টেনশন নবেন্দু পালিয়ে কোথায় গেল। – দেড়দিনের মধ্যে খবর মিলল, পালিয়ে নবেন্দু কলকাতা গেছে, নিজের বাড়ি। নবেন্দুর বাবা নাকি তাকে দেখে খুশী হয়ে বলেছে, “আরে তুই আসছিস জানলে তো আমি তোকে স্টেশন থেকে স্যালুট করিয়ে নিয়ে আসতাম!” — এইসব কানাঘুষো শোনা গেল, আমরা কেউই ছেলেটাকে বিশেষ পছন্দ করতাম না, আমরা মুখ বেঁকিয়ে বললাম, ‘যেমন ন্যাকা ছেলে, তেমন ন্যাকা বাপ। সেক্স করে পালিয়েছে, তাকে খাতির করার ঘটা দেখ না!’ – তারপর নবেন্দু আর বিদ্যাপীঠে ফিরল না কিছুদিন, বাড়িতেই থেকে গেল। আমরা একরকম খুশীই হলাম।

আমি পরে বুঝেছিলাম কেন নবেন্দুর বাবা নবেন্দুকে কিছু বলেনি। পরে মানে অনেক পরে। ওর বাবা ছিল বড় সাইকিয়াট্রিস্ট। যে ছেলে রাতে রেপড হয়ে ক্যাম্পাসের পাঁচিল ডিঙিয়ে একা একা পুরুলিয়া থেকে কলকাতা পালায়, তার ভেতরকার সাইকোলজিক্যাল ট্রমা এবং ইমিডিয়েট ইমোশনাল প্রয়োজন কী, সেটা আমরা ক্লাস টেনের মহাবুঝদার বাচ্চারা না বুঝলেও, তার মনোরোগবিশেষজ্ঞ বাপ ঠিকই বুঝেছিল। সেই সাপোর্টটাই বাড়িয়ে দিয়েছিলেন উনি ছেলের দিকে।

আমি পরে বিদ্যাপীঠের কারো কারো সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, বিদ্যাপীঠ জীবনের এই প্রায়-ইউনিভার্সাল যৌন অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে কেউই মুখ খুলতে চায় না। যারা এর রিসিভিং এন্ডে ছিল, তারা বড় হয়ে সেইসব ট্রমার কথা ভুলে থাকতে চায়, চেপে দিতে চায় চিরকালের মতো; আর যারা সেইসব রেপ করেছিল সেই বয়সে, তারা সরাসরি অস্বীকার করে। মুখ ফিরিয়ে নেয়, বিরক্তি আর রাগ দিয়ে আড়াল করে। ডবল আড়াল। সে যে নিজে কোনোদিন সমকামী ছিল, সেটাকে আড়াল, এবং সেই সমকামের তাড়নায় সে যে কোনোদিন কাউকে ধর্ষণ করেছিল, সেই সত্যির কাঁটাটাকে আড়াল। অপরাধবোধের কংক্রিটে গাঁথা ডিনাইয়ালের দেয়াল।

কে জানে, যদি ওপরতলা থেকে ব্রহ্মচর্যের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার বিকৃতিটা না থাকত, তাহলে হয়তো সেক্সের রেপ হয়ে ওঠার বিকৃতিটাকে আমরা পাশ কাটিয়ে যেতে পারতাম। মানুষ বড় জটিল জানোয়ার।

(চলবে)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *