কৈফিয়ৎ
স্কুলবেলার গল্প প্রায়ই করে সবাই, আমিও করি। এবং সবাই বলে স্কুলের সময়টা জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়। কিন্তু স্কুলজীবন সুন্দর ছাড়াও আরেকটা জিনিস, সেটার কথা কেউ বলে না।
মানুষের স্কুললাইফে যত ভায়োলেন্স আর নিষ্ঠুরতার গল্প চাপা থাকে, স্মৃতিচারণের সময় আমরা সেগুলোকে খুব একটা ভেসে উঠতে দিই না। চেপে যাই, এবং চেপে রাখি।
নিজেদেরকে বলি, নেগেটিভ কথা ভুলে যাওয়াই ভালো। লেট দ্য পাস্ট বী পাস্ট।
কিন্তু আমি এখন বলতে চাই যে এটা নিজের চোখে ধুলো দেওয়া। রিপ্রেশন। মুখ ফিরিয়ে রেখে মনকে স্তোক দেওয়া। কারণ পুরোনো কথা মনে রাখলে আজকের কাজে মন দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
এই রিপ্রেশনের প্রয়োজন সবার পড়ে না। পড়ে তাদের, যাদের স্কুললাইফে নেগেটিভ অভিজ্ঞতার চোটটা একটু বেশী। পুরোনো আঘাতের দাগ তারাই বেশী বয়ে বেড়ায় যারা আহত হয়েছিল বেশী। স্কুলে যারা সোশ্যাল ল্যাডারের টপে থাকে, তাদের এই ভার কম হয়। হলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটা তৈরী হয় গিল্ট থেকে, স্কুলজীবনে করা নিষ্ঠুর কাজের দরুণ পরে তৈরী হওয়া গিল্ট। কিন্তু যারা চোট-খাওয়া পার্টি, সেই হেরোরা কিন্তু গিল্টে ভোগে না। তারা ভোগে অন্য অবসাদে। একেকদিন, রাতে শুয়ে শুয়ে পুরোনো প্রতিশোধের ফ্যান্টাসিতে আঙুল বোলায়।
এদিকটা কেউ এক্সপ্লোর করে না তেমন। দু’মুখো সমস্যা। একদিকে যেমন এই প্রসঙ্গে লিখতে গেলে নিজেদের চাপা অতীতকে কফিন খুঁড়ে বার করে আনতে হয়, অন্যদিকে তেমন এই প্রসঙ্গে ভাবতে গেলে এখনকার ‘সরল ছেলেমেয়ে’দের সারল্য আর ততটা সুধামাখা লাগে না। নিজেদের ক্লাসনাইন কেমন ছিল মনে করলে আর এখনকার ক্লাসনাইনকে তেমন উজ্জ্বল মনে হয় না।
ভাবছি জিনিসটা নিয়ে লিখি। মনে হচ্ছে, লেখা দরকার।
স্কুলতুতোরা কী বলে?
————————–
(ইন্সপিরেশন-ঋণ: দ্য মেন্টালিস্ট, “রোজ-কালারড গ্লাসেজ”)