আজ কাল পরশু (২)

আমাদের কটেজটা রিসর্টের একদম পেছনদিকে। কাঠের দেওয়াল, কাঠের মেঝে, মাঝখানে একটা গোল খাট, খাট না বলে পালঙ্কই বলা ভাল। একপাশে একটা দেওয়ালজোড়া আয়না, এয়ারকন্ডিশনার, অ্যাটাচড বাথরুম— সবমিলিয়ে একটা রাজসিক ব্যাপার। রাতে আর গাড়ি চালানো যাবে না বলে গুলই ঠিক করল কোথাও ঘাঁটি গাড়া ভাল; যেহেতু বড় শহরে কেউ চিনে ফেলতে পারে, অতএব দারিংবাড়ি। খাওয়াদাওয়ার পাট চুকে গেছে অনেকক্ষণ, ম্যাডাম কমরেড এখন স্নান করতে ঢুকেছেন, আর আমি শুয়ে শুয়ে ছবি আঁকছি।

কিছুক্ষণ আগে ঈশান ফোন করেছিল। ওখানে এখন কোনো নেটওয়ার্ক নেই, স্যাটেলাইট ফোনই ভরসা।মোটামুটি যা খবর পাওয়া গেল, অবস্থা খুব সুবিধের না। জো-রা খিদিরপুরে একটা ছোট্ট ফ্রন্ট খুলেছে, যাতে কলেজ স্ট্রীটেই গোটা ফোর্স জড়ো না হতে পারে। আমরা পেছোতে পেছোতে এখন আদি মোহিনীমোহনে এসে ঠেকেছি, দক্ষিণে বৌবাজার হাতছাড়া হয়ে গেছে, এখন মেডিকেল কলেজের ডানপাশটা বাঁচানোর জন্য লড়ছে ঈশানরা। কমতে কমতে আমাদের সংখ্যা এখন জনাপঞ্চাশ। বিদ্যালক্ষ্মী মারা গেছে, পেরুমল আন্নার মেয়ে, তনুময়, জনিও। ফোনের ওপাশ থেকে ঈশান হাসতে হাসতে বলল, ‘গুলকে বলিস বেস বাজানো যেন না ছাড়ে। তারপর ব্যান্ডটা আবার নতুন করে শুরু করতে হবে। তুই হবি ভোকালিস্ট।’
‘আর তুই লিড গিটারিস্ট।’ আমি বললাম।
‘হতে পারত, কিন্তু আজ যা রিদম শুনলাম, তাতে মনে হচ্ছে ড্রামার হলেই ভাল হবে,’ ঈশান শুনি এখনো হাসছে,’বাই দ্য ওয়ে,শোন না,আর একটা প্লেটুন আসছে। এটা দেখে নিয়ে রিং ব্যাক করছি, ঠিক আছে?’

গুল মাথা মুছতে মুছতে বাথরুম থেকে বেরোল। শার্টের বোতামগুলো খোলা, নাভির রুপোলি স্টাডটা দেখা যাচ্ছে, সেটাকে ঘিরে একটা বিশালাকার ড্রাগন, তার লেজটা নেমে গেছে তলপেটের নিচের দিকে, আর মুখটা শেষ হয়েছে বুকের বাঁদিকে, পাঁজরের ছ’নম্বর হাড়ের কাছে। লিজা গতবছর করে দিয়েছিল ট্যাটুটা। ও-ও কলেজ স্ট্রীটে আমাদের সঙ্গে ছিল, কিন্তু এখন আদৌ বেঁচে আছে কি না কে জানে!

এলোমেলোভাবে শার্টের বোতামগুলো লাগিয়ে গুল আমার পাশে বসল, তারপর ছবিগুলো দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল, ‘ঈশান কি বলল?’
আমি গুলের দিকে তাকালাম। ‘তুই কি করে বুঝলি?’
গুল হাসল, ‘ওয়াইল্ড গেস হানি। তো কি অবস্থা এখন?’
‘খারাপ,’ আমি বললাম, ‘জো-রা খিদিরপুরে একটা ফ্রন্ট খুলেছে, কলেজ স্ট্রীটে জনাপঞ্চাশ আছি, বৌবাজার এখন মেডিকেল কলেজে এসে ঠেকেছে, ওইদিকে আদি মোহিনীমোহন।’
‘চেনা পরিচিত কে কে মারা গেছে?’
‘আপাতত বিদ্যালক্ষ্মী, তনুময় আর জনি। শ্রীজার তলপেটে গুলি লেগেছে, মনে হয় না বাঁচবে।’
‘আজিদ বা?’
‘সূর্য সেন স্ট্রীটে, পুঁটিরামের ছাদে। একটা স্নাইপার জোগাড় হয়েছে, আপাতত উনি মেঘনাদ।’
গুল হেসে ফেলল। ‘এটা ভাল ছিল,মেঘনাদ। মেশিনগান এসেছে?’
আমি ঘাড় নাড়লাম, ‘নাহ্‌; ওটা খিদিরপুরেই রয়ে গেছে। জো-দের কাছে দুটো মোটে অ্যাসল্ট রাইফেল, তাই আজিদ বা-ই না করেছেন মেশিনগান আনতে।’

গুল দেখি কিছু না বলে চুপ করে ছবিগুলো দেখতে লাগল। সবক’টা ছবি কালকের। রাস্তাজোড়া ব্যারিকেড, তার পেছনে একটা মেয়ে কখনো রাইফেলে টোটা ভরছে, কখনো গুলি ছুঁড়ছে, কখনো দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে, কখনো এক রাস্তা লোকের সামনে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দিচ্ছে, তার ডানহাতটা সাইবারনেটিক, বাঁহাতজোড়া ট্যাটু। আমি আলতো করে গুলের হাতটা ধরলাম।
‘গুল?’
গুল আমার দিকে তাকাল।
‘গুল,’ আমি গুলের হাতের নীল নীল শিরাগুলোর উপর আঙুল বোলাতে বোলাতে বললাম, ‘আমি কোনোদিন ভাবিনি আমাদের চারপাশটা এইভাবে ঘেঁটে যাবে। আই নেভার ওয়ান্টেড এনি ওয়ার, এনি টার্ময়েল, গানস, রাইফেলস, নাথিং… আই, আয়াম…’
‘স্কেয়ারড?’
আমি ঘাড় নাড়লাম, ‘আ লট। মোর দ্যান ইউ থিঙ্ক।’
গুল আমার হাতটা চেপে ধরল। আমি গুলের দিকে তাকালাম। লম্বাটে একটা মুখ, নীল চোখ, ঘন বাদামি চুল ঢেকে দিয়েছে ওর বাঁচোখ আর কাটা দাগটা। নাকের ডগায় একবিন্দু জল লেগে আছে, পাতলা ঠোঁটদুটো থিরথির করে কাঁপছে। গুল ডানহাত দিয়ে চুলগুলো কানের পাশে সরিয়ে দিল।
‘তোর গতবছরের প্রাইড প্যারেডটা মনে আছে সাহানা?’
‘মনে আছে।’ আমি মৃদুস্বরে বললাম।
‘মনে কর, তার দু’দিন আগে স্যাফ্রনিস্টরা বিজিতাকে খুন করেছে, দেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সোশ্যাল ওয়ার্কার, স্পার্টাকানদের স্টেট ইউনিটের মেম্বার; সেইবারই প্রথম স্পার্টাকানরা নিজেদের ঝান্ডা নিয়ে আমাদের মিছিলে হেঁটেছিল। উল্টোদিক থেকে স্যাফ্রনিস্টরাও একটা মিছিল বের করেছিল, ওদের সেই ট্রেডমার্ক তরোয়াল-ত্রিশূল নিয়ে।’ গুল স্বপ্নালুভাবে বলে যেতে লাগল, ‘আমরা মিছিলের মাঝখানে ছিলাম। আমি গিটার বাজাচ্ছিলাম, তুই তাম্বুরিন বাজিয়ে গান গাইছিলি, ঈশান ছিল, রফি ছিল, ইয়ং স্পার্টাকানদের ওই ছোট্টমত ছেলেটা ছিল, কি যেন নাম, অপু। কিছুক্ষণ পরে নীলাঞ্জনা ম্যা’মও আমাদের সঙ্গে ভিড়ে গেলেন। তুই সলিল চৌধুরীর গান গাইছিলি, শ্যামলবরণী ওগো কন্যা। পুলিশ রানি রাসমণি রোডে আমাদের মিছিলটা আটকে দিল। স্যাফ্রনিস্টরা ঠিক আমাদের উল্টোদিকে, মাঝখানে পুলিশের কর্ডন আর হাতপঞ্চাশেক ফাঁকা জায়গা। তুই হঠাৎই ঈশানের হাত থেকে লাল পতাকাটা টেনে নিলি, তারপর সেটা গায়ে জড়িয়ে আমাকে টানতে টানতে মিছিলের একেবারে সামনে নিয়ে এলি স্যাফ্রনিস্টরা আমাদের দেখে তুমুল গালিগালাজ শুরু করল। ততক্ষণে ঈশানরাও চলে এসেছে। তুই গান শুরু করলি, এদেশ তোমার আমার,/ তাই আমরা গড়ি খামার,/ আর আমরা গড়ি স্বপন দিয়ে সোনার কামনায়। ঈশান গাইছে, অপু গাইছে, নীলাঞ্জনা ম্যা’ম গাইছেন, গোটা মিছিল গাইছে, তখন হঠাৎই আমি তোকে টেনে নিয়ে সবার সামনে চুমু খেলাম। পরেরদিন কাগজে কাগজে সেই ছবি, বাসে-ট্রামে লোকজন তোর আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকাচ্ছে; কয়েকদিন পরে উড়ো চিঠি আসা শুরু হল বাড়িতে, হুমকি দিয়ে ফোন, রেপ করে দেব, খুন করে দেব…’ গুল হঠাৎই চুপ করে গেল। বাইরে অবিশ্রান্তভাবে ঝিঁঝিঁ ডাকছে, আমার ফোনে বাজছেন পিঙ্ক, ‘হোয়াট অ্যাবাউট আস’ —
We are searchlights, we can see in the dark
We are rockets, pointed up at the stars
We are billions of beautiful hearts
And you sold us down the river too far.
আমি হাত বাড়িয়ে ব্যাগ থেকে একটা বই বের করলাম। কার্ল মার্কসের বুকস অফ ভার্স;তারপর বইটা খুলে পড়তে শুরু করলাম—
‘ To me, no Fame terrestrial
That travels far through land and nation
To hold them thrillingly in thrall
With its far-flung reverberation
Is worth your eyes, when shining full,
Your heart, when warm with exultation,
Or two deep-welling tears that fall,
Wrung from your eyes by song’s emotion.
Gladly I’d breathe my soul away
In the Lyre’s deep melodious sighs,
And would a very Master die,
Could I the exalted goal attain,
Could I but win the fairest prize —
To soothe in you both joy and pain.
‘জেনির জন্য কবিতা, তাই না?’
আমি হাসলাম। গুলও আলতো হাসল, তারপর আমার আরো কাছে সরে এল। এখন আমি ওর চুল থেকে
গোলাপফুলের গন্ধ পাচ্ছি, ওর নরম বুক আমার কনুইতে ঠেকছে। গুল দীঘল চোখে আমার দিকে তাকাল, সোজা আমার চোখের দিকে, আমার হাত থেকে বইটা টেনে নিল, তারপর আমাকে গাঢ় একটা চুমু খেল। ওর চোখের মত গাঢ়। সমুদ্রের মত গাঢ়। গলায় অদ্ভুত মাদকতা ঢেলে পিঙ্ক এখন গাইছেন,
What about us?
What about all the times you said you had the answers?
What about us?
What about all the broken happy ever afters
What about us?
What about all the plans that ended in disaster?
What about love? What about trust?
What about us?
আমি হাত বাড়িয়ে আলো নিভিয়ে দিলাম।


ঠিক মাঝরাতে কেমন একটা অস্বস্তিতে ঘুম ভেঙে গেল। পাশে হাত বাড়িয়ে গুলকে ডাকতে গিয়ে দেখি গুলও বিছানায় নেই। ধড়মড় করে উঠে বসতে যাব, আচমকাই কে যেন আমার মুখ চেপে ধরল। তাকিয়ে দেখি গুল, ঠোঁটে আঙুল দিয়ে ইশারায় আমাকে চুপ করতে বলছে।
‘তোর রিভলবারটা কই?’ গুল ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল।
আমি ইশারায় দেখিয়ে দিলাম, বালিশের নিচে।
‘বের কর। লোডেড তো?’
আমি ঘাড় নাড়লাম, ‘পুরো।’

আমি বালিশের নিচে হাত ঢুকিয়ে রিভলবার বের করে সেফটি ক্যাচ খুললাম। এতক্ষণ খেয়াল করিনি,এখন দেখি গুলের হাতেও রিভলবার। গুল গুটিগুটি পায়ে দরজার পাশে গিয়ে দাঁড়াল। দরজার নিচের ফাঁক দিয়ে বাইরের প্যাসেজের আলো এসে পড়েছে ঘরের মধ্যে, আর কয়েকটা কালো কালো ছায়াতে মাঝেমধ্যেই সেই আলো ঢেকে যাচ্ছে। আমি হাত বাড়িয়ে আমার লুজার্সটা টেনে নিতে যাচ্ছিলাম, গুল ফোঁস করে উঠল।
‘ফোকাস,’ হিসহিসিয়ে বলল গুল, ‘দে আর নট আফটার ইওর লুজার্স ফাকহেড, দে আর আফটার ইউ।’ ঠিক তখনই দড়াম করে দরজাটা খুলে গেল।

এরপর মিনিটপাঁচেক ধরে ঘরের মধ্যে যেটা হয়ে গেল,সেটাকে একটা ঝড় বললেও কম বলা হয়। নেহাতই কোনো এক্সপ্রেশন খুঁজে পাচ্ছি না তাই ঝড় বললাম,আসলে ঝড়ের চেয়েও ভয়ানক কিছু। দরজা খুলে প্রথমেই যে লোকটা ঢুকল, গুল তাকে ডানহাত ধরে আছড়ে ফেলল মাটিতে, তারপর তার হাতে ধরা রিভলবারটা দিয়েই পেছনের লোকটার পায়ে গুলি করল। লোকটা কাটা কলাগাছের মত মাটিতে পড়ে কাতরাতে লাগল। গুল প্রথম লোকটার ডানহাতটা মুচড়ে ভাঙল। আমি খাটে বসে রেডিয়াস আর আলনা ভাঙার শব্দ স্পষ্ট শুনতে পেলাম। গুল এবার প্রথম লোকটার কপালে গুলি করল, তারপর উঠে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় লোকটাকে গুলি করতে যাবে, এমন সময় আরো দু’জন লোক হুড়মুড় করে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ল। একজন গুলকে সোজা মেঝেতে চেপে ধরল, আর একজন যথেচ্ছ লাথিঘুঁষি মারতে লাগল। গুলের সাইবারনেটিক হাতটা চেপে রেখেছে লোকটা, রিভলবারটা ছিটকে চলে গেছে টেবিলের তলায়, গুলের গলায় লোকটার পা, ক্রমশ চোখগুলো বড় বড় হয়ে আসছে ওর, জিভটা বেরিয়ে আসতে চাইছে, আমি উপায়ন্তর না দেখে পর পর তিনটে গুলি চালিয়ে দিলাম। প্রথম গুলিটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লাগল আয়নায়, আয়নাটা ঝনঝন শব্দ তুলে চুরমার হয়ে গেল,পরের দুটোর একটা যে লোকটা গুলকে লাথি মারছিল, সোজা তার রগে গিয়ে লাগল, আর একটা যে গুলকে মেঝেতে চেপে ধরে ছিল, তার হাত ছুঁয়ে বেরিয়ে গেল। লোকটা একটা অস্ফুট শব্দ করে গুলকে ছেড়ে দিয়ে হাত চেপে ধরল।

গুল এতক্ষণ ধরে এই সুযোগটারই অপেক্ষা করছিল। ডানহাতটা ছাড়া পেতেই গুল লোকটাকে সোজা আছড়ে ফেলল সেন্টার টেবিলের উপর, তারপর প্রচণ্ড এক ঘুঁষিতে লোকটার মাথা থেঁতলে ঘিলু বেরিয়ে এল। গুল ওর রিভলবার তুলে নিয়ে যার পায়ে গুলি লেগেছিল, তার কপালে চেপে ধরল।
‘কিসনে ভেজা তুঝে?’
লোকটা কিছু না বলে একটা বাঁকা হাসি হেসে দু’পাশে মাথা নাড়ল।
গুল রিভলবারটা আরো জোরে চেপে ধরে হিসহিসিয়ে বলল, ‘বোল, নেহি তো এহি পে ঠোক দুঙ্গি।’
লোকটা এবার একটা বিশ্রী গালি দিয়ে গুলের মুখে একগাদা থুতু ছিটিয়ে দিল। আমি ভাবলাম গুল মনে হয় এই গুলি চালিয়ে দিল, কিন্তু গুল দেখি শান্তভাবে থুতু মুছে বলল, ‘সাহানা, এটাকে সার্চ কর।’
আমি লোকটাকে আগাপাশতলা সার্চ করলাম। জামার পকেট থেকে একটা গুটখার প্যাকেট বেরোল, প্যান্টের ডানপকেটে একটা ছোট্ট ছুরি, বাঁপকেটে একটা সস্তা দেশলাই আর চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া সিগারেটের প্যাকেট। মানিব্যাগটা পাওয়া গেল হিপপকেটে। মানিব্যাগে আছে বলতে কয়েকটা খুচরো পয়সা, দুটো দুমড়ে যাওয়া দশটাকার নোট, দুটো পাঁচশো টাকা, গুচ্ছের লটারির টিকিট, আর একটা গেরুয়া রঙের কার্ড।
কার্ডের সামনে লোকটার ছবিসুদ্ধ নাম, পেছনে একটা লোগো, স্বস্তিক চিহ্নকে জড়িয়ে ফণা তুলে আছে একটা সাপ, নিচে লেখা স্যাফ্রনিজম ইজ প্রাইড। আমি লোকটার কপালে রিভলবার ধরে রইলাম, ততক্ষণে গুল কার্ডটা উল্টেপাল্টে দেখল, তারপর বলা নেই কওয়া নেই, দুম করে লোকটার কপালে গুলি চালিয়ে দিল।
সেই ঘরভর্তি রক্ত আর কাঁচের টুকরোর মধ্যেই আমরা দু’জন বেশকিছুক্ষণ মুখোমুখি বসে রইলাম।দু’জনের কারো মুখেই কোনো কথা নেই। কিছুক্ষণ পরে দু’জনেই উঠে পড়লাম, চারখানা লাশকে ধরাধরি করে বাইরে বের করে দেওয়া হল। গুল টাওয়েল দিয়ে ঘষে ঘষে হাতে-মুখে লেগে থাকা রক্তের দাগগুলো যতটা পারা যায় তুলল, তারপর বিছানার একপাশে পড়ে থাকা জিনসটা পরতে পরতে বলল, ‘গেট ড্রেসড শানু, উই আর লিভিং।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *