সবার সোশ্যাল লাইফ একরকম হয় না।
যখন কলেজে পড়ি, নরেন্দ্রপুরে, তখন একদিন এস.পি. ক্লাসে এসে বোর্ডে লিখেছিলেন, –
There is a pleasure in the pathless woods,
There is a rapture on the lonely shore,
There is society where none intrudes,
By the deep Sea, and music in its roar.
বায়রনের কবিতার লাইন। আমাদের প্রসডি পড়া হচ্ছিল, ছন্দ। কিন্তু ওই যে লাইনটায় আছে না, দেয়ার ইজ সোসাইটি হোয়্যার নান ইনট্রুডস, ওইটা একটা খুব অদ্ভুত সত্যি কথা।
সোসাইটি বলতে এমনিতে মানুষে-মানুষে মেলামেশার কথাই বোঝায়। কিন্তু এই যে আরেক ধরনের সোসাইটি, যেখানে কেউ আসে না, কেউ মাথা গলায় না সেইখানে যে এক অন্য মিলনের ঘটনা ঘটে কখনো কখনো, তার খবর বায়রন দিচ্ছেন এই লাইনে। সেই মেলামেশা মানুষের সাথে নয়। সেই মেলামেশা কার সাথে, তার হদিস আসছে এরই পরের লাইনে –
I love not Man the less, but Nature more,
From these our interviews, in which I steal
From all I may be, or have been before,
To mingle with the Universe, and feel
What I can ne’er express, yet cannot all conceal.
এর বাংলা করলে যা দাঁড়ায় তা গীতবিতানেই অনেকরকমভাবে আছে, সে আর আমি নতুন করে কীই বা বলব, আর কতই বা কোট করব।
আমি এর আগের পোস্টে লিখেছিলাম যে আমি এমনিতেও আনসোশ্যাল টাইপের ছেলে ছিলাম। যা ছিলাম তা এখনো আছি যদিও, এখন কেবল মুখোশ পরতে শিখেছি এই যা। কিন্তু সেকথা বলছি না। বলছি যে যদিও আনসোশ্যাল কথাটা লিখেছিলাম, তবুও একরকম সোসাইটি কিন্তু আমারও ছিল। সেটা মানুষ-ঘেঁষা নয় ততটা, না-মানুষী ব্যাপারই বেশী।
‘বলাই’ বলে একটা গল্প আমাদের পাঠ্য ছিল, যেটা এমনিতেও আমার অসহ্য লাগত, আর আরও বিকট লাগত কারণ কেউ কেউ মনে করত এবং মুখেও বলত যে আমার সাথে নাকি বলাইয়ের মিল আছে। নাথিং কুড বী ফারদার ফ্রম দ্য ট্রুথ। আমার ঝোপঝাড়ে চরে বেড়ানো বলাইয়োচিত ছিল না, ছিল সুকুমার রায়ের প্রবন্ধ, জেরাল্ড ডারেল-জিম করবেটের লেখা, আর স্টিভ আরউইন ইন্সপায়ার্ড। কিন্তু তাই বলে কখনো কোনো গাছপালার সাথে বন্ধুত্ব হয়নি এমন নয়।
আমার জীবনে দুইখান নিমগাছের সাথে আলাপ ছিল, তার মধ্যে দ্বিতীয়জনের ছবি আজকে দিলাম।
================================================================================
এই ছবির লোকেশন আইকনিক, – বিদ্যাপীঠের রোমান্টিকতম রাস্তা, চ্যারিটেবিলের রাস্তা।
এটা একদম চ্যারিটেবিলের সামনে থেকেই তোলা। সেই যে রাস্তার পাশে বৃষ্টিভেজা রঙ্গন ছিল, সেই পথেই। ওই ঝোপগুলোর মধ্যে প্রায় সারা বছরই তাঁবু-মাকড়সাদের দেখা যেত। একদম পথের শেষে, যেখানে চ্যারিটেবিলের গোলাপী বাড়ি, সেখানে ছিল এই নিমগাছটা। একটা ডাল নুইয়ে দেওয়া। হাতের মতো। দূরে মাঠের ওপারে দেখা যায় আমাদের বাড়ি। বিবেক মন্দির। শিবানন্দ সদন। ডাইনিং হলের একটুখানি। শিবানন্দ সদনের সামনে ওই বকুলতলা।
ফণীদা যেদিন বিদ্যাপীঠে এসেছিলেন, সেই দিনে লাগানো হয়েছিল সেই বকুল গাছ। আমরা ক্লাসে গল্প শুনেছিলাম।
বকুলতলাটা আছে এখনও।