মানুষিক

যৌন যে কোনো কিছু দেখলে মানুষের বিকট আচরণ নতুন কিছু না। “হায় কলকাতা আঁতেলঅপ্সরী তোমার একী পরাজয়” বলে গান গাওয়ারও কিছু নেই, কারণ লোকজনের মানসিকতা দড়াম করে একরাতে তৈরী হয়নি। একরাতে ঠিকও হবে না। সামনে বরং একটা পরাজয়েরই ওয়েভ আসছে। সেটার মধ্যে দিয়ে টিকে থাকতে হবে, ময়দান কামড়ে থেকে যেতে হবে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার থেকে বেশী কঠিন হবে সেটা। ফেসবুক পোস্ট তো একটা অস্ত্র মাত্র।

এসব সভ্য-অসভ্য, পাবলিক-প্রাইভেট, মানুষ-অমানুষ – এ সমস্ত বিতর্ক সব ফজুল বাত। সেক্স দেখলে লোকজনের ধরন পাল্টে যায়। একবার দেখেছিলাম এক ব্যাপার।

কলেজ স্কোয়ার, বেলা হয়তো এগারোটা-বারোটা। মোটামুটি ফাঁকাই। আমি বসে ছিলাম সংস্কৃত কলেজের পিছনদিকের ওই বেঞ্চিগুলোর একটায়। সামনে নীলসাদা শিক, তার ওপারে সুইমিং পুল।

আশেপাশে কয়েকটা কুকুর ছিল।

এমন সময় দেখি, শিকের ওইপারে এক কাণ্ড বেধেছে। একটা কুকুর আরেকটা কুকুরের সাথে সেক্স করছে।

হয়েই থাকে, সবাই জানে কুকুর এই কাজের বেলায় কোনো আড়াল খোঁজে না। তা, চারপাশের আরো যে’কটা কুকুর ছিল, তারা তো ঘাউঘাউঘাউঘাউ করতে করতে এই জুটির চারধারে জুটতে শুরু করল। খুব কাছে ঘেঁষছে না, একটা সম্মানজনক দূরত্ব রেখে জোরে ডেকে যাচ্ছে শুধু।

একটা কাপ্‌ল সেক্স করছে, বাকি পোটেনশিয়াল এবং ভিরাইল ক্যান্ডিডেটদের কাছে সেটা অনভিপ্রেত। তাই হয়তো এই চেঁচামেচি। কাকে খাবারের টুকরো পেলেও একই কারণে বাকি কাকেরা কা-কা-কা-কা লাগায়।

লাগায়, নাকি লাগাত। যখন ছোট ছিলাম, বাড়ির ছাদে যেতাম, দেখতাম। অনেকদিন এসব দেখিনি। জানিনা, এখনও লাগায় কিনা।

যাইহোক, এবার কুকুরের ডাক শুনে লোকজন তাকাতে শুরু করল। এবং তাকিয়েই দ্যাখে – সেক্স!!!

আর যায় কোথায়।

পিলপিল করে লোক জমে গেল রেলিংগুলোর ধারে। সবাই দাঁত বার করে দেখছে, মুখে বাঁকা হাসি। হাসির ওপরে মাউস হোভার করলে ট্যাগ দেখাচ্ছে – “অশ্লীলতা”। কুকুরগুলোর ওপর হোভার করলে কিছু দেখাচ্ছে না কিন্তু।

এইরকম ভাবে কিছুক্ষণ গেল। সে প্রায় মিনিট দশেক, তখনো লোকজনের শো দেখা শেষ হয়নি। আমার কাজ ছিল, আমি বেরিয়ে গেলাম।

তা এর থেকে কী বোঝা গেল। চন্দ্রিল লিখেছিল, – বাঙালী দুই প্রকার, ভদ্র সেক্স-স্টার্ভড আর অভদ্র সেক্স-স্টার্ভড। সেই জন্য খাবার দেখলে স্টার্ভেশনের জ্বালা বড় চিনচিন করে। নোলার টান বড় টান। তখন কেউ ডগ ইন আ মেঞ্জার হয়, কেউ ফক্স হয়ে কাককে গান শোনাতে বলে, কেউ বা বলে – “দ্রাক্ষাফল অতিশয় খাট্টা”।

কুকুররা তো আর সেক্স-স্টার্ভড নয়। তবে এরা ডোমেস্টিক অ্যানিম্যাল। মানুষের পাশাপাশি বিবর্তন হয়েছে। কে জানে, আবার শিখে না ফ্যালে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *