একটি মৃত্যুহীন অমর কবিতা
জীবনে এই যে নোংরা চাকরি কী করে বা টানা যায়?
কী করে বা বলো এ অত্যাচার প্রতিদিন মানা যায়?
এই যে বিকট কাজের বহর নিয়ে প্রতিদিন জাগে এ শহর
কী করে এসব চুপচাপ মেনে সয়ে যাই বলো হায়?
(কোরাস)
শুধু মনে করো সেই গলগ্রাম যেথা ওবেলিক্স থাকে
বেঁটেখাটো সেই গুঁফো গল সদা সাহায্য করে তাকে
ভেবে দ্যাখো সেই রোমান সেনারা কত না কষ্টে ছিল
খেত চড় ঘুষি বুবুমবাবাম খেত চটাপট কিলও
তাদের তুলনা করে দ্যাখো সাথী, কত সুখে আছো তুমি
কী আরামে আছো, তুমি সেনা নও, এ নহে সে গলভূমি
মনে করো তুমি যাও বনপথে পাশে ফোটে নীল ফুল
ডালে ডালে পাখি, কোটরেতে প্যাঁচা ঘুম দেয় বিলকুল
সহসা দেখিলে কোথা হতে সাদানীল ডোরাকাটা জামা
সে ফুলের ঝাড়ে কেন চুপিসাড়ে যেন দেয় ধীরে হামা
লেগে গেল তব বত্রিশপাটি দাঁতেদাঁতে ঠকাঠকি
খেয়ে গেলে মার বেমালুম যেন হাল্কের হাতে লোকী
উড়ে গেল তব বর্ম বর্শা, চটিজোড়া গেল রয়ে
উড়ে গেলে তুমি শিবিরের পানে সোজা শর্টকাট হয়ে
তার চেয়ে ভেবে দেখো ভালো করে এ জীবন কত ভালো
ওবেলিক্স নয়, শুধু বস তব অফিস করিছে আলো।
দিতে পারে কিছু বেয়াড়া খিস্তি, চাপাইতে পারে কাজ
যে কাজ করিতে সাতদিন লাগে, তা চাহিতে পারে আজ
কিন্তু বন্ধু মারিবে না কভু ফটাস করিয়া চাঁটি
লইবে না খুলি খেলিবার তরে তোমার দন্তপাটি।
সেই সেনাপতি, ভেবে দ্যাখো আজি, কত না বেদনা তার
সব যশোগাথা গল গ্রামে এসে হয়ে গেল ছারখার
বালকের মতো ক্রন্দনরত সেনাপতি ধাড়ি ধাড়ি
‘কচ্ছপ’ হয়ে এসে, ‘খরগোশ’ হয়ে ফিরে গেল বাড়ি।
কত না ধূর্ত গুপ্তচরেরা কত না চেষ্টা করে
অবশেষে সেই মারধোর খেয়ে ফিরে গেল নিজ ঘরে
ভালো লাগিত কি, কাঁপিতে কাঁপিতে প্রতিদিন বনে ঘোরা
কিংবা আজব পানীয়প্রভাবে আকাশে ভাসিয়া ওড়া
ভালো লাগিত কি এরকম কথা কখনো শুনতে পেয়ে
রোমান শিকার বেশী পপুলার বুনো শূকরের চেয়ে!
তাই বলি ভাই, কাঁদিও না বাবা, করে যাও তব কাজ
অনেক ভাগ্যে গল থেকে দূরে চাকরি পেয়েছো আজ
ঘষে যাও তুমি কলম নিয়ত, মেরে যাও নিজ পিছু
মনে জেনে রাখো মাহিনার চেয়ে বড় নাহি আর কিছু
বসের খ্যাঁকানি যত বাজে হোক, ভালো তা কিলের চেয়ে
তাই হাসিমুখে অফিসের গুণগান যাও তুমি গেয়ে।
.
.
.
_ সমাপ্ত _