– আরে বাজে ঝামেলা বুঝলেন তো। সে তখন তাকে কোনো কথা বোঝানোর চেষ্টা করাও অসম্ভব। কী আর করব, মার খেলাম।

– ভুলটা কিন্তু আপনার নিজের।

– সে তো জানিই –

– না, আপনি বুঝতে পারছেন না। আপনি যে ধরে নিলেন, যে আপনার দাদা আর নেই, – ডেড, গন – এটা তো আপনি নিজের চোখে দেখেননি। ভেরিফাই করেননি কোনোভাবে। আন্দাজের ঢিল। অনেকদিন ধরে শখ ছিল, গদিতে বসার, – আর অন্য দুর্বলতার কথা বাদ দিলাম, – সব মিলে আপনি মনে মনে খুব স্ট্রংলি চাইছিলেন যে দাদার মারা যাওয়াটা সত্যি হোক। সেটাই ভুল করেছিলেন।

– আর তখন অত কী আর কেউ ভাবে নাকি, – স্পষ্ট দেখলাম রক্ত, চীৎকার শোনা গিয়েছিল পরিষ্কার, সবাই শুনেছে –

– এই ভুলটা না আপনারা সবাই করেন। থিওরাইজিং উইদাউট সাফিশিয়েন্ট ফ্যাক্টস। এটা একদম আনপ্রফেশনাল ধরনের কাজ। আসলে ডিডাকশন করা আর গেস করার মধ্যে যে তফাৎ সেটা সবার কাছে ধরা পড়ে না।

– শুনুন, ওইরকম সিচুয়েশনে ওইরকম একটা জায়গায় কারও অত মাথা ঠান্ডা করে ভাবার কন্ডিশন থাকে না। সঙ্গে মাত্র কয়েকজন লোক, দাদা যদি ওই গুণ্ডাকে সামলাতে না পেরে থাকে তাহলে আমাদের তো কোনো চান্সই নেই! ওদিকে বাড়িতে বৌদি আর আমার নিজের স্ত্রী, – ভাইপোটা তো নেহাত ছোট। আমার একটা কিছু হয়ে গেলে এসব দেখবে কে? যুদ্ধক্ষেত্র ব্যাপারটা আপনার ফরেনসিক ল্যাব নয়, বুঝেছেন।

– দেখুন যুদ্ধক্ষেত্র আমিও অনেক দেখেছি। এই যে কথাটা বললেন, এর থেকেই বোঝা যায় আপনি কত বড় – মানে, অন্ধ অনুমানের ওপর নির্ভরশীল। আপনি আর যুদ্ধ কী দেখেছেন? ট্রেঞ্চ-ওয়ারফেয়ার কাকে বলে জানেন? নিজের ইউনিটের লোককে চোখের সামনে গ্যাস খেয়ে মরতে দেখেছেন কোনোদিন? কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী লাগে না মশাই। কাকে যে মারলাম, আর কার জন্যে যে মার খেলাম. – কিছুই জানলাম না। হেঃ। যুদ্ধ আর আপনারা কী করেছেন আর।

– যাই হোক কথা হল ওইরকম সময়ে আমার অত মাথায় আসেনি। আমি যেটা ভালো বুঝেছিলাম তা-ই করেছিলাম।

– অর্থাৎ দাদাশুদ্ধু ওই লোককে গুহায় সীল করে দিলেন। হেঃ, দাদাকে খুব একটা দোষ দিতে পারিনা মশাই। স্বয়ং বুদ্ধদেবেরও মাথা গরম হয়ে যেত।

– দূর দাদা চিরকালই ওরকম রগচটা। জানি তো আমি। কোনো ইমপাল্‌স কন্ট্রোল নেই। সবার সামনে দুমদাম পিটিয়ে বের করে দিল! অ্যাট লিস্ট বৌদিকে জিজ্ঞেস করলে পারত..

– আপনিও যেমন! সভার মাঝখানে আপনার দাদা আপনার বৌদিকে জিজ্ঞেস করবে ‘হ্যাঁ গো ও তোমার সাথে কিছু করেনি তো?’ ননসেন্স! আপনার দাদাকে আপনি আদৌ চিনতে পারেননি। কই এখনো তো কোনো রাগ-ফাগ করতে দেখলাম না।

– কোথায় বলুন তো ওরা? সেই সকাল থেকে দু’জনে কোথায় বেরিয়ে গেল তারপর থেকে দেখা নেই। আপনার বন্ধুটির তো আবার কী করে বসেন ঠিক নেই –

– মোবাইলটা দেখুন না –

– অ্যাঁ? – হ্যাঁ এই দেখি – এহে, কতগুলো মিস্‌ড কল হয়ে আছে! মেসেজও আছে ..

– (হাসি) এইবারে ওটা ব্যবহারটা শিখে নিন। নিন আপনার দাদা এসে গেছে।
(দরজার দিকে আগাইয়া গিয়া) কোনদিকে গেছিলেন আজ? ও ব্যাটা আপনাকে ভোগায়নি তো? ……

সহাস্য মুখে বালী কহিলেন, ‘এই যে জন, সুগ্রীবের সাথে গল্প করছিলে নাকি? আরে শার্লক ভায়া একটা জিনিয়াস। আজ কি করেছে শোনো।…..’

শার্লক মুখ টিপিয়া কোট হ্যাঙ্গারের দিকে অগ্রসর হইলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *